প্রকাশিত :  ০৯:১৫
০৪ জানুয়ারী ২০২২

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ প্রজন্ম গড়তে কাজ করছে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক প্রোগ্রাম

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ প্রজন্ম গড়তে কাজ করছে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক প্রোগ্রাম

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে পরিবর্তিত প্রযুক্তিগত প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় নতুন দক্ষতায় সমৃদ্ধ তরুণ প্রজন্ম বিনিমার্ণে দেশের স্বনামধন্য ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্বব্দ্যালয়ে চালু আছে ব্যাচেলর অভ সায়েন্স ইন ইনফরমেশন এন্ড কমিনিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসসি ইঞ্জনিয়ারিং ইন আইসিই) প্রোগ্রাম। প্রথাগত স্নাতক পর্যায়ের প্রকৌশলবিদ্যার পুরানো আঙ্গিক থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস এন্ড কমিনিউকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছে।

২০১৮ সাল থেকে ইন্সটিটিউট অভ ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের কারিগরি ও প্রকৌশল শিক্ষা এক্রিডিটেশন বোর্ড (বায়েট) কর্তৃক প্রোগ্রামটির স্বীকৃতি অব্যাহত রয়েছে। পাঠদান ও মূল্যায়নে আউটকাম-ভিত্তিক শিক্ষাপদ্ধতি (ওবিই) অন্তর্ভুক্তকরণে এবং একই সাথে শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে নতুন পাঠ্যক্রম প্রবর্তন হয়েছে।  

স্নাতক পর্যায়ের এই প্রোগ্রামটির অন্যতম মিশন হল সর্বাধুনিক শিক্ষা প্রদান করা। এই লক্ষ্যে নতুন পাঠ্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অটোমেশন এবং ডেটা সায়েন্সে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক কোর্স চালু করা হয়েছে। 

প্রোগ্রামটির আরেকটি লক্ষ্য হ'ল স্নাতকদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশ করা। স্নাতকদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তুলতে “প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, এন্ট্রাপ্রানারশিপ এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন্টার‍্যাকশন” কোর্স সংযোজন করা হয়েছে। সফল প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়িক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ ও মতবিনিময়ের একটি অনবদ্য প্লাটফর্ম হবে এই কোর্সটি। পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবসা ও প্রকল্প পরিচালনায় ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং পদ্ধতির সাথেও পরিচিত করানো হবে।

স্নাতকদের মধ্যে নৈতিকতা এবং দায়িত্বের উচ্চ মান গড়ে তোলা প্রোগ্রামটির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। প্রকৌশলীদের বিশেষায়িত কর্মপরিবেশ ও দায়িত্বের দিকে লক্ষ্য রেখে নতুন "ইঞ্জিনিয়ারিং এথিক্স" কোর্স সংযুক্ত করা হয়েছে পাঠ্যক্রমে। কোর্সওয়ার্কের অংশ হিসাবে কেস স্টাডি, উন্মুক্ত আলোচনা, বিতর্ক এবং নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চতর নৈতিক কর্মপদ্ধতি চর্চার অভ্যাস গড়ে তোলা হবে।

চতুর্থ শিল্পযুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল সাইবার, ফিজিকাল এবং বায়োলজিকাল ডোমেইনের মিথস্ক্রিয়া। এই মিথস্ক্রিয়া নতুন সাইবার নিরাপত্তা এবং সাইবার এথিকাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। "কম্পিউটার এবং সাইবার সিকিউরিটি" এবং "সাইবার এথিক্স অ্যান্ড লিগাল ফ্রেমওয়ার্কস"-এর মতো কোর্সগুলি শিক্ষার্থীদের এই নতুন চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত করবে।

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি অভূতপূর্ব হারে পরিবর্তিত হচ্ছে। এখনকার চাকরির বাজার নতুন স্নাতকদের মধ্যে কারিগরি দক্ষতা সন্ধান করে। এই লক্ষ্যে বিদ্যমান গবেষণাগারগুলোর সুযোগ-সুবিধাসমূহ হালনাগাদ করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেট অভ থিংস (আইওটি), সাইবার নিরাপত্তা এবং রোবোটিক্সের মতো সর্বাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক নতুন গবেষণাগার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন ফাইবার অপটিক্স, মাইক্রোওয়েভ ও টেলিকম মডিউল এবং অপটিক্যাল কমিউনিকেশন সিস্টেম সিমুলেশন সফ্টওয়্যার সংযোজন করা হয়েছে গবেষণাগারগুলোতে।

স্নাতকদের মধ্যে জীবনব্যাপী শিক্ষার তৃষ্ণা জাগিয়ে তোলা এবং উদ্ভাবন ও দলগত কাজের জন্য সহায়ক একাডেমিক পরিবেশ পরিচর্যা করা প্রোগ্রামটির অন্যতম মিশন। উদ্ভাবন এবং দলগত দক্ষতা মূল্যায়নের উপর দৃষ্টি নিবেশ করে এক বছরকাল দীর্ঘ "ফাইনাল ইয়ার ডিজাইন প্রজেক্ট" সন্নিবেশ করা হয়েছে পাঠ্ক্রমে। জীবনব্যাপী শিক্ষার ধারণাটি অনুশীলন করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ সরবরাহ করবে এই প্রজেক্ট, যা বাস্তবায়নে প্রজেক্ট গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিবিড় সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে।

উৎকর্ষ বা শ্রেষ্ঠত্বের সাধনা কখনই শেষ হবার নয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। আর তাই, বিভাগ, অনুষদ সদস্য, শিক্ষার্থী, প্রাক্তন ছাত্র, নিয়োগকর্তা এবং শিল্প উপদেষ্টাদের অংশগ্রহণে একটি নিরবচ্ছিন্ন মানোন্নয়ন বা কন্টিনিউয়াস কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট (সিকিউয়াই) প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অংশীদারগণের প্রতিক্রিয়া ও মূল্যায়ন নিয়মিত বিরতিতে পাঠ্যক্রম, শিক্ষাদান ও শিখণপ্রক্রিয়া উন্নত করতে ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে প্রোগ্রামটিতে স্প্রিং ২০২২ সেমিস্টারে ভর্তি চলছে। ভর্তি আবেদনের শেষ তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২২। করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের ধারা অব্যাহত রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ অব্যাহত রাখবে আগামী সেমিস্টারেও। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আগামী সেমিস্টার থেকে তারা ক্যাম্পাসে ফেরত যাবে এবং পূর্ণ উদ্যমে অফলাইন পাঠদান শুরু করবে।

Leave Your Comments




শিক্ষাঙ্গন এর আরও খবর