প্রকাশিত : ০৬:৩৬
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
অর্থনীতি ডেস্ক: দেশে নানা অজুহাতে গত কয়েক মাস ধরেই অস্থিতিশীল নিত্যপণ্যের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো বেড়েছে চাল, সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের মতো নিত্যপণ্যের দাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামবাজার, বাড্ডা, রামপুরার কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া ৩৫ টাকার পটোল ৪০-৪৫, বেগুন (গোল) ৫০-৫৫, টমেটো ১১৫, গাজর ১২০, করলা ৬০-৬৫, শসা ৫০-৬০ ও শিম ১৫০, ৩৫ টাকার কাঁচা মরিচ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি ছাড়াও ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ ও ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী হ্যাপি আক্তার বলেন, প্রত্যেক মাসের পাঁচ তারিখের পর যখন মানুষ বেতন পাওয়া শুরু করে তখন সকল প্রকার নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। মাসের ২৫ তারিখের পর আবার সামান্য কিছুটা কমে। পরের মাসে আবার দাম বাড়ে। গত কয়েক মাস ধরে আমি এই বিষয়টি লক্ষ করে যাচ্ছি।
অন্য আরো একজন ক্রেতা বলেন, নিত্যপণ্যের দাম একবারে না বাড়িয়ে দফায় দফায় বাড়ানো অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকৌশল। তারা ভেবেছে এভাবে পণ্যের দাম বাড়ালে মানুষ কিছুই বুঝতে পারবে না। কিন্তু বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়ার আদতে কোনো যুক্তি নেই। এটা শুধুই ব্যবসায়ীদের কারসাজি।
এদিকে গত তিন মাসের তুলনায় গেল ১০ দিনে চালের দাম সামান্য কম থাকলেও আবার তা দ্বিগুণ বেড়েছে। পাইকারিতে মাঝারি মানের চাল (পাইজাম, ব্রি-২৮, লতা) বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি। ভোক্তারা খুচরা বাজরে এ চাল কিনছেন ৫৫-৫৬ টাকা কেজিতে। আর পাইকারিতে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা কেজি; যা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। পাইকারিতে ৬৯-৭১ টাকায় বিক্রি হওয়া চাল খোলাবাজারে ৭৩-৭৫ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না বিক্রেতারা।
দাম বাড়া প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ভারতে চালের শুল্ক বাড়ানোর পরই নতুন করে মিলাররা দাম বাড়িয়েছে। তারা ইস্যু খুঁজে পেলেই চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজার কখনো স্থিতিশীল থাকে না।
রামপুরা বাজারের এক মুদিদোকানি বলেন, চালের বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। গত সপ্তাহে দেশে চালের দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ভারতে শুল্ক বাড়ানোর পর আবার বেড়ে গেছে। মিলারদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে আছে। তাদের জরিমানা করা হয় না। ঢাকার বাজারে এসে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়। অথচ চালের দরে কারসাজি করে মিলাররা।
ফার্মের মুরগির ডিম ও মুরগির বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। গত সপ্তাহে ১৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০-১৮৫ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০, সাদা কক মুরগি ৩২০ ও লেয়ার মুরগির কেজি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি ডজন ডিম আরো ১০ টাকা বেড়ে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে।
গত এক মাসে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৩০-৫০ টাকার বেশি বেড়েছে। বাজারে ২০০ টাকার নিচে তেলাপিয়া মাছ পাওয়া যাচ্ছে না; যা গত মাসের শুরুর দিকেও ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হতো। এ ছাড়া ২৫০ গ্রাম ইলিশের কেজি ৫০০, ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৪৫০, পাঙ্গাশ ১৮০, মাঝারি রুই ২৮০, চাষের কই ২৩০, নলা মাছের কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।