প্রকাশিত : ১৮:২৫
০৫ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:৩২
০৫ অক্টোবর ২০২৫
৫ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য ও বাজার প্রবণতা বিশ্লেষণ করে ধারণা করা যায় যে পরবর্তী কার্যদিবস, অর্থাৎ ৬ অক্টোবর, ২০২৫, বাজার সতর্কতামূলক অবস্থান থেকে শুরু হতে পারে।
যদিও ব্লু-চিপ কোম্পানিগুলোতে বিক্রয় চাপ অনুভূত হতে পারে, দৈনিক গড় লেনদেনের দৃঢ় প্রবণতা এবং তিন দিনের সংশোধনের পর বাজারে সবুজ সংকেত ফিরে আসার সম্ভাবনা স্বল্পমেয়াদী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারে। গত ৭ দিন ধরে বাজারে একটি স্থিতিশীল বা ফ্ল্যাট প্রবণতা বিরাজ করছে, যা আগামীকালও বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
৬ অক্টোবর, ২০২৫-এর বাজার সম্ভবত ‘ফ্ল্যাট থেকে সামান্য ইতিবাচক’ অবস্থানে সীমিত ওঠানামা করবে। প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যাংক এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ সুদের সুবিধা নিয়ে বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সফলতা নির্ভর করবে তথ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি সচেতনতার ওপর। বিনিয়োগকারীদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল নিম্নরূপ:
১. মৌলিক ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ব্যবহার করুন:
বাজারের অস্থির অবস্থায় কেবল অনুমানের ওপর নির্ভর না করে, কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য যাচাই করা মৌলিক বিশ্লেষণ এবং স্বল্পমেয়াদী মূল্যের গতিবিধি বোঝার প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ উভয়ই ব্যবহার করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। বিশেষত, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস পাওয়ায় গুণগত মানসম্পন্ন (Quality) স্টকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা উচিত।
২. বৈচিত্র্যকরণ নিশ্চিত করুন:
এক বা দুটি স্টকে সমস্ত অর্থ বিনিয়োগ না করে ঝুঁকি কমানোর জন্য বিভিন্ন খাত ও কোম্পানিতে বৈচিত্র্যকরণ (Diversification) করা আবশ্যক। বর্তমানে উচ্চ সুদের সুবিধাভোগী আর্থিক খাত এবং রিয়েল এস্টেটের মতো মূল্যস্ফীতি-হেজিং সম্পদ পোর্টফোলিওতে বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের দিক বিবেচনা করুন:
স্বল্পমেয়াদে কঠোর মুদ্রানীতির চাপ থাকলেও, বাজারে আগামী কয়েক বছরের জন্য বার্ষিক আয়ের প্রায় ১৪% প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা রয়েছে। এটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। বাজার যখন ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক উদ্বেগের কারণে কম মূল্যায়নে থাকে, তখন মানসম্পন্ন স্টক সংগ্রহের সুযোগ তৈরি হয়।
৪. ডিএসই-এর কৌশলগত প্রস্তুতি:
দৈনিক গড় লেনদেনের বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদী উচ্চ আয়ের প্রত্যাশা নির্দেশ করে যে ডিএসই কৌশলগত ব্রেকআউটের জন্য প্রস্তুত। তবে সেই সময় না আসা পর্যন্ত, উচ্চ ঝুঁকির ব্লু-চিপ বা লিভারেজড বিনিয়োগে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
ঢাকার পুঁজিবাজার বর্তমানে একটি সংহত (Consolidation) প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাজারের স্থিরতা তারল্যের উত্থান এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত কঠোরতার দ্বন্দ্বে প্রভাবিত হয়েছে। সংহত অবস্থার প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো কঠোর মুদ্রানীতি এবং সামগ্রিক রপ্তানি আয়ের হ্রাস।
তবে, দৈনিক গড় লেনদেনের দৃঢ় বৃদ্ধি বাজারের অন্তর্নিহিত চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রমাণ দিচ্ছে। এই সময়টিকে শুধুমাত্র ঝুঁকি হিসেবে না দেখে, সতর্কভাবে কৌশলগত প্রবেশ বা পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাসের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত।
সফল বিনিয়োগের চাবিকাঠি হলো খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি-সচেতন বৈচিত্র্যকরণ, যতক্ষণ না মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার কঠোর অবস্থান শিথিল করে।