প্রকাশিত : ১৯:১৮
০৩ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:২৩
০৩ অক্টোবর ২০২৫
শারজাহের রাতটা শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠল বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো টাইগাররা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষের ঝড়ে টাইগারদের জয়ের নায়ক হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান এবং শরিফুল ইসলাম।
শেষে জয়ের জন্য ৬ বলে বাংলাদেশের দরকার ছিল দুই রান। আজমতউল্লাহর প্রথম বল লং অন দিয়ে বাউন্ডারিতেই পাঠিয়ে দিলেন শরীফুল ইসলাম। বাংলাদেশ লক্ষ্যে পৌঁছে গেল ৫ বল বাকি রেখেই।
আফগানিস্তানের ১৪৭ রান বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল ৮ উইকেট হারিয়ে। ২ উইকেটের জয় বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে সিরিজও। তিন ম্যাচ সিরিজে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশ ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে ট্রফি নিশ্চিত করেছে।
সিরিজজয়ের ম্যাচে শেষের নায়ক শরীফুল। দশ নম্বরে নেমে ৬ বলে ১১ রান করেছেন এই বাঁহাতি। এর আগে ম্যাচের শুরুতেও বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন এই শরীফুলই। উইকেট পাননি, কিন্তু প্রথম তিন ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের বড় শট খেলা থেকে আটকে রেখেছিলেন। পরে ডেথ ওভারের বোলিংয়ে ফিরে তিনিই ফিরিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজকে, ৩০ রান করে যিনি আজ আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
আফগানিস্তানকে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৭ রানে আটকে রাখার পথে বিশেষ ভূমিকা ছিল নাসুম আহমেদ, সাইফউদ্দিনেরও। নাসুম ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট, সাইফউদ্দিন উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে শুরুটা ধীরেসুস্থে করেছে আফগানরা। দুই ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতাল এবং ইবরাহিম জাদরান এগিয়েছেন দেখেশুনে। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৫ রান তুলেছে আফগানিস্তান।
আফগানদের ওপেনিং জুটিটা ভেঙেছেন রিশাদ হোসেন। ১৯ বলে ২৩ রান করা আতালকে পারভেজ হোসেন ইমনের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান রিশাদ। ৫৫ রানের মাথাতে ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। আতালের বিদায়ের পর ইবরাহিমের সাথে যোগ দিয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
গুরবাজ এবং ইবরাহিম এগিয়েছেন কার্যকরী ব্যাটিংয়ে। দুজনে মিলে দলের বোর্ডে রানও তুলেছেন। ধীর ব্যাটিংয়ে ৩৭ বলে ৩৮ রান করে ইবরাহিম ফিরেছেন দলের ৭১ রানের মাথাতে। গুরবাজ খেলেছেন ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংস।
শেষ দিকে ক্রিজে জুটি বাঁধেন মোহাম্মদ নবী এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দুজনের ক্যামিওতে ভর করে ১৫০ রানের কাছাকাছি গেছে আফগানিস্তান। তবে থেমেছে ১৫০ রানের আগেই।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে ১৪৭ রান তোলে আফগানিস্তান। ১৭ বলে ১৯ রান করে টিকে ছিলেন ওমরজাই। নবী অপরাজিত ছিলেন ১২ বলে ২০ রান করে। ম্যাচে দুইটি উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। ১৩ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।
জবাবে দুই টাইগার ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং পারভেজ হোসেন ইমন ফিরেছেন দ্রুত। দুজনই করেছেন ২ রান করে। ৭ বলে ২ রান করেছেন তানজিদ। ৫ বলে ২ রান করেন ইমন। দলের ১৬ রানের মাথাতে সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার।
তিন নম্বরে নামা সাইফ হাসান ভালো শুরু পেয়েও বেশি একটা সুবিধা করতে পারেননি। লম্বা হয়নি সাইফের ইনিংস, ১৪ বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন সাইফ। ২৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান তোলে টাইগাররা।
৪র্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী এবং জাকের আলী অনিক। দুজনের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে এগিয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। ব্যাট হাতে নিজেদের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন দুজন। জাকের হাঁকিয়েছেন ২টি করে ছক্কা এবং চার। ২৫ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন জাকের।
জাকেরের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন নুরুল হাসান সোহান। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের ইনিংস টেনেছেন শামীম। সোহানও সঙ্গ দিয়ে গেছেন। ২২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলা শামীম আউট হয়েছেন দলের ১০২ রানের মাথাতে।
সোহান ক্রিজে টিকে ছিলেন। সাত নম্বরে সবাইকে কিছুটা চমকে দিয়ে নেমেছেন নাসুম আহমেদ। ১ ছক্কায় ১১ বলে ১০ রান করেছেন নাসুম। পরে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং রিশাদ হোসেন বিদায় নিলে বেশ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে আরও একবার ত্রাতা হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। এবার সঙ্গী হিসেবে ছিলেন শরিফুল ইসলাম। সোহানের ২১ বলে ৩১ রানের হার না মানা ইনিংসের সাথে শরিফুলের ৬ বলে ১১ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৫ বল হাতে রেখে ২ উইকেটে জয়লাভ করে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান। ১টি করে উইকেট শিকার করেন নূর আহমেদ এবং মুজিব উর রহমান।