প্রকাশিত :  ১১:৪৯
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২১
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের নতুন উদ্যোগ: তেজগাঁওয়ে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম হাইটেক স্কাইস্ক্র্যাপার ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’

✍️ নিজস্ব প্রতিবেদক | অর্থনীতি

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের নতুন উদ্যোগ: তেজগাঁওয়ে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম হাইটেক স্কাইস্ক্র্যাপার ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’
ঢাকার আকাশরেখা বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে রাজধানীর বাণিজ্যিক মানচিত্র। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল—যা দীর্ঘদিন ধরে শুধুমাত্র শিল্পকারখানার জন্য পরিচিত ছিল—সেখানে এখন তৈরি হতে যাচ্ছে এক যুগান্তকারী প্রকল্প। এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এবং হেডরুম গ্রুপ যৌথভাবে হাতে নিয়েছে দেশের প্রথম হাইটেক স্কাইস্ক্র্যাপার নির্মাণের মহাপরিকল্পনা—‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’। এটি শুধু একটি বহুতল ভবন নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ও জীবনযাত্রার কেন্দ্র, যা বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

আজকের দিনটি বাংলাদেশের নির্মাণশিল্প ও বাণিজ্যিক পরিমণ্ডলের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের নিজস্ব কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হলো চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’ প্রকল্পের সূচনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—

জনাব মনির আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড,
জনাব ইশতিয়াক আহমেদ, কোম্পানি সেক্রেটারি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড,
জনাব রেজুয়ান আহম্মেদ, চেয়ারম্যান ও সিইও, হেডরুম গ্রুপ
মি. ডেনি, কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ), চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (CSCEC)।

বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান CSCEC নির্মাণকাজের দায়িত্ব নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার একাধিক আন্তর্জাতিক মানের মেগা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। ফলে ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’ কেবল স্বপ্নে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এক দৃঢ় বাস্তবতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

কী থাকছে ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’-তে?
প্রকল্পটির অন্যতম আকর্ষণ হলো এর বহুমুখী নকশা। এখানে শুধু কর্পোরেট অফিস নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক, বিনোদন ও জীবনযাত্রার কেন্দ্র (হাব) তৈরি হবে। ভবনের ভেতরে থাকছে—
অত্যাধুনিক লাক্সারি অফিস স্পেস,
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়,
আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা চেইন হোটেল,
সর্বাধুনিক বিজনেস সেন্টার,
অভিজাত রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে জোন,
সুইমিং পুল ও ফিটনেস সেন্টার,
জরুরি অবস্থায় ২৪/৭ চিকিৎসা সেবা।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের মতে, ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’ হবে এমন এক বহুমাত্রিক কমপ্লেক্স, যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও বিলাসবহুল জীবনযাত্রা একসাথে মিলিত হবে।

বাংলাদেশের প্রথম হাইটেক বিল্ডিং
নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত সুবিধার দিক থেকেও এই ভবন হবে অনন্য। পুরো ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেমে। ভবনের ভেতরে প্রবেশ, লিফট ব্যবহার, অফিসে প্রবেশাধিকার কিংবা পার্কিং—সবকিছুই পরিচালিত হবে ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে।
এটি হবে দেশের প্রথম হাইটেক বিল্ডিং, যেখানে শুধু স্থাপত্যশৈলী নয়, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার বাণিজ্যিক পরিবেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য আরও আগ্রহী হবেন। কারণ এখানে একসাথে অফিস স্পেস, হোটেল, ব্যাংকিং সুবিধা এবং বিনোদনের সুযোগ পাওয়া যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বাংলাদেশকে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র (হাব) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এটি হবে ঢাকার বাণিজ্যিক অবকাঠামো উন্নয়নের এক যুগান্তকারী ধাপ।

তেজগাঁও: নতুন ব্যবসায়িক কেন্দ্র
ঢাকার তেজগাঁও এলাকা দীর্ঘদিন ধরে শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। তবে এখন এই অঞ্চলের গুরুত্ব বদলাচ্ছে। ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’ নির্মিত হলে তেজগাঁও ধীরে ধীরে কর্পোরেট কেন্দ্র (হাব) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এর ফলে আশপাশে আরও বিনিয়োগ আসবে, জমির মূল্য বাড়বে, নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

কর্মসংস্থান ও মানবসম্পদ উন্নয়ন
প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ভবিষ্যৎ পরিচালনায় সরাসরি ও পরোক্ষভাবে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। স্থপতি, প্রকৌশলী, নির্মাণ শ্রমিক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে হোটেল ম্যানেজমেন্ট কর্মী—সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক সুযোগ তৈরি হবে।
একই সঙ্গে স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা আন্তর্জাতিক মানের কর্মপরিবেশে কাজ করার সুযোগ পাবেন, যা তাদের দক্ষতা বাড়াবে এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা তৈরি করবে।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা
‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’-এর মতো একটি হাইটেক প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে। একটি দেশে আধুনিক অবকাঠামো থাকলেই কেবল সেখানে গ্লোবাল কোম্পানিগুলো সদর দপ্তর খোলার সাহস করে। এই প্রকল্প সেই সাহস যোগাবে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে বাংলাদেশকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আধুনিক বাংলাদেশের প্রতীক
সব মিলিয়ে, ‘টাইমস স্কয়ার, ঢাকা’ কেবল একটি ভবন নয়—এটি আধুনিক বাংলাদেশের প্রতীক। এটি আমাদের অগ্রগতি, আত্মবিশ্বাস এবং বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতার সক্ষমতার এক বাস্তব প্রতিফলন, যেখানে একসাথে থাকবে ব্যবসা, প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং জীবনযাত্রার সমন্বয়।

এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ঢাকার আকাশরেখায় যোগ হবে নতুন এক আভিজাত্য—যা প্রতিদিনের জীবনে শুধু সৌন্দর্যই আনবে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

Leave Your Comments




শিল্প বাণিজ্য এর আরও খবর