প্রকাশিত : ২১:০৯
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রিয় মহোদয়,
আজ পুঁজিবাজারের ক্যানভাসে যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা কেবল কিছু সংখ্যার ওঠা-নামা নয়। এই খেলাতে আজ ফতুর হচ্ছে আমাদেরই সমাজের সাধারণ মানুষ—যারা জীবনের সমস্ত কষ্টার্জিত পুঁজি ঢেলেছিল একটি নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায়। তাদের মধ্যে কেউ হয়তো দিনের পর দিন কারখানায় খেটেছেন, কেউবা সামান্য দোকান চালিয়ে সংসার টেনেছেন। আজ তাদের সব স্বপ্ন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকের সাথে সাথে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে।
চারিদিকে শুনি উন্নয়নের জয়জয়কার। কিন্তু যে দেশের সাধারণ মানুষ নিজের কষ্টার্জিত টাকা হারিয়ে পথে বসছে, সেখানে এই উন্নয়ন কিসের? প্রশ্ন জাগে, রাষ্ট্র কি কেবল দূর থেকে দর্শকের মতো এই বিপর্যয় দেখবে? যে পুঁজিবাজারের মূল স্তম্ভ এই বিনিয়োগকারীরা, আজ তারাই অবহেলিত, অরক্ষিত।
দেশের এই বাজারের নেতৃত্বে যাদের বসানো হয়েছে, তাদের কি সত্যি কোনো অভিজ্ঞতা আছে? নাকি এই দায়িত্ব শুধু কিছু মানুষের খেয়াল-খুশির উপর নির্ভরশীল? এই নিয়োগ লাখো মানুষের ভাগ্য নিয়ে এক নির্মম পরিহাস। আমরা জানি, আপনার হাতেই এই প্রহসনের অবসান হতে পারে। বাজারের হারানো বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হলে যোগ্য, সৎ এবং প্রজ্ঞাবান মানুষদের এই দায়িত্বে আনতে হবে।
আজকে দরকার নির্লজ্জ কারসাজি আর ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের লাগাম টেনে ধরা। দরকার প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য বন্ধ করা। দরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সুরক্ষা তহবিল, যা তাদের সর্বস্বান্ত হওয়া থেকে বাঁচাবে। দরকার স্বচ্ছ নীতি আর কঠোর জবাবদিহি, যা এই বাজারের বুকে আবার আস্থার জন্ম দেবে।
মহোদয়, আজ আপনিই জাতির শেষ আশ্রয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের চোখ আজ আপনার দিকে তাকিয়ে আছে। যদি আপনি আজ এক দৃঢ় পদক্ষেপ নেন, তবে এই নীরব কান্না দূর হবে, হারানো আস্থা ফিরে আসবে এবং দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড আবার শক্ত হবে।
যদি আমরা আজ চুপ করে থাকি, তবে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আগামী প্রজন্ম জানবে, আমরা আমাদের দেশের সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিলাম।
আমাদের বিশ্বাস, আপনার দূরদর্শিতা আর দৃঢ় নেতৃত্বে এই দুঃসময় কেটে যাবে।
জনগণের এই নীরব আর্তি আপনি শুনবেন—এই বিশ্বাসটুকু নিয়েই আমরা বেঁচে থাকতে চাই।
বিনীত,
বাংলাদেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে
করিম চাচা