প্রকাশিত : ০৭:৫১
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ লাখ টাকা বা তার বেশি মুনাফা করেছে– এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা স্থগিত করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠিয়ে বিকেলে তা না পাঠানোর জন্য বার্তা পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমিত হবে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
গত রোববার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে এমন তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে বুধবার অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় এ বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনার আগে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কাছে চিঠি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ডিএসই। এর কারণ ছিল, এ তথ্য অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য। তা ছাড়া এমন তথ্য পাঠানোর কোনো সময়সীমাও ছিল না।
জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালামও এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সমকালকে বলেন, এটা ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্যের মধ্যে পড়ে। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ বা অনিয়ম ছাড়া কমিশন এভাবে সকল বিনিয়োগকারীর তথ্য সংগ্রহ করবে কিনা, তা নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।
প্রসঙ্গত, জাতীয় বাজেটে শেয়ারবাজার থেকে মূলধনি মুনাফা ৫০ লাখ টাকা ছাড়ালে তার ওপর কর দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট সব বিনিয়োগকারী কর দিচ্ছেন কিনা, তা যাচাই করার জন্য গত ২৫ আগস্ট এনবিআর থেকে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিএসইসিকে চিঠি পাঠিয়েছিল।
কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস জানিয়েছে, গতকালই সিএসই থেকে এমন তথ্য চেয়ে চিঠি পেয়েছিলেন। তবে বিকেলে তথ্য পাঠাতে হবে না মর্মে নতুন বার্তা পাঠানো হয়েছে। জানতে চাইলে ডিএসইর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় এ বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত ব্রোকারদের কাছে তথ্য না চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করে দরপতন হচ্ছে শেয়ারবাজারে। সর্বশেষ ৯ কর্মদিবসের মধ্যে ছয় দিনের দরপতনে ডিএসইএক্স ২৭৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। বিপরীতে বাকি তিন দিনে সূচক বেড়েছে ৯২ পয়েন্ট।
গতকাল বৃহস্পতিবারও ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৮ কোম্পানির মধ্যে ২৮২টি দর হারিয়েছে। এ ছাড়া ৩৭ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯টির দর কমেছে। ক্রমাগত দরপতনে ডিএসইর লেনদেন কমে ৬৫৫ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। যেখানে দুই সপ্তাহ আগে এ বাজারেই এক হাজার ৪৪২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।
এদিকে আইপিও প্রসপেক্টাস বা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর অসংগতির প্রমাণ পাওয়ায় সাত নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কেন নিষিদ্ধ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া এবং শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গত মঙ্গলবার কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো– এ হক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক, আতা খান, সিরাজ খান বসাক এবং ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং। গত বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানায়, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, রিংসাইন টেক্সটাইল, আমান কটন ফাইব্রাস এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নিরীক্ষক হিসেবে কাজ করেছিল এসব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান।