প্রকাশিত : ১৯:১৫
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:৫৪
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা লুটপাট ও অনিয়মের ফল এখন সাধারণ গ্রাহকরা দিচ্ছেন। বহু ব্যাংকে জমা থাকা গচ্ছিত অর্থ তুলতে পারছেন না মানুষ। বিশেষ করে এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মতো পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক কার্যত নামেমাত্র টিকে আছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের উদাসীনতার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একসময় বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে আর্থিক সহায়তা দিলেও এখন সেই সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজধানীর মতিঝিল, হাটখোলা, বনানী ও মিরপুরের বিভিন্ন শাখায় প্রতিদিনই ব্যাংকের বাইরে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। গ্রাহকরা টাকা তুলতে না পারায় ক্ষোভ, হতাশা ও কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। মতিঝিলের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক বলেন, "ছেলের স্কুল ফি দিতে এসেছিলাম, কিন্তু টাকা পেলাম না। ব্যাংকের লোকেরা শুধু কাল-পরশুর আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।"
ইউনিয়ন ব্যাংকের হাটখোলা শাখায় দেখা গেছে, কর্মকর্তারা অসহায়ভাবে জানাচ্ছেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা বন্ধ থাকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে কোনো অর্থ ফেরত দিতে পারছেন না। এমনকি অনেক কর্মকর্তা নিজের বেতনও পাচ্ছেন না।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংক খাতের এই সংকট একদিনে তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক প্রভাব, খেলাপি ঋণ, কাগুজে ব্যবসায়ীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং বড় ধরনের দুর্নীতির কারণে এখন সাধারণ গ্রাহকরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ধাপে ধাপে মার্জার ও সংস্কারের আওতায় আনা হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। বর্তমানে সাধারণ গ্রাহকরা প্রতিদিন ব্যাংকে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন। জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে না পারায় অনেকে ধারদেনার জালে আটকে যাচ্ছেন।
সংক্ষেপে: ব্যাংক খাতের দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ম ও দুর্নীতির খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধুমাত্র নিয়মিত আর্থিক সংস্কার এবং তদারকি ছাড়া এই সংকটের সমাধান এখনও দূরদূরান্তর।