প্রকাশিত :  ০৭:০৩
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হাওরের রহস্য-রোমাঞ্চে জলবায়ু পরিবর্তনের গল্প: শর্টফিল্ম ‘নাওবিবি’

হাওরের রহস্য-রোমাঞ্চে জলবায়ু পরিবর্তনের গল্প: শর্টফিল্ম ‘নাওবিবি’
সংগ্রাম দত্ত

হাওরের জল, আকাশ আর প্রকৃতি যেন এক অদ্ভুত আবেগে জড়িয়ে থাকে মানুষের জীবনকে। সেই আবেগ, রহস্য আর জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতাকে ঘিরেই নির্মিত হচ্ছে শর্টফিল্ম ‘নাওবিবি’। শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদের গল্প ও চিত্রনাট্যে ছবিটি পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা মশিউর রহমান কায়েস। প্রযোজনায় রয়েছেন ম্যাক রিপন।

চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহাফুজ মুন্না। বড় পর্দায় ‘উড়াল’ ছবির মাধ্যমে আলোচনায় আসা এই অভিনেতা এবার হাজির হচ্ছেন ভিন্ন চরিত্রে—ট্র্যাভেলারের ভূমিকায়। রহস্যময় তরুণী মায়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন গায়িকা হিসেবে পরিচিত ইসরাত জাহান পমি। ফিকশনে এটাই তার প্রথম কাজ। দুইবার নতুন কুঁড়ি পুরস্কার পাওয়া এ শিল্পী এবার অভিনয়ের মাধ্যমেও দর্শকের মন ছুঁতে চান।

সিনেমাটোগ্রাফিতে কাজ করেছেন আনন্দ সরকার। কো-অর্ডিনেটর হিসেবে ছিলেন আহমদ আমিন। ফেঁউচ্চা চরিত্রে দেখা যাবে শাহ শান্তকে এবং শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছে শাহ ওবায়েদ নেহান।

নির্মাতার কথা

পরিচালক মশিউর রহমান কায়েস বলেন,
“শুরু থেকেই আমরা ভালো একটা টিম পেয়েছি। হাওরের প্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা আর সংস্কৃতিকে শিল্পে পরিণত করার চেষ্টা করেছি আমরা। এখন পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে।”

অভিনেতাদের অভিজ্ঞতা

ট্র্যাভেলারের চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে মাহাফুজ মুন্না বলেন,
“চিত্রনাট্য পড়েই চরিত্রের ভেতর ঢুকে গিয়েছিলাম। শুটের কয়েকদিন আগে থেকেই ব্যাকপ্যাক নিয়ে ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। সেই ক্লান্ত শরীর ও চেহারাই তুলে ধরেছি ক্যামেরার সামনে। স্বাধীন চলচ্চিত্রের কষ্ট থাকলেও টিমওয়ার্কে আমি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা পেয়েছি।”

অন্যদিকে, মায়া চরিত্রে কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ইসরাত জাহান পমি বলেন,
“এটি কেবল অভিনয় নয়, আমার কাছে মনে হয়েছে আমি হাওরের প্রতিনিধিত্ব করছি। দর্শক আমার মধ্যে শুধু মায়াকেই নয়, হাওরকেও দেখবে।”

গল্পে রহস্য-রোমাঞ্চ

শর্টফিল্মের গল্পে দেখা যায়, এক ট্র্যাভেলার হাওরে এসে অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। রাতের আঁধারে পানিতে হঠাৎ জ্বলে ওঠে আগুন, আর সেই আগুনের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে রহস্যতরুণী মায়া। তাকে অনুসরণ করতে গিয়ে ট্র্যাভেলার প্রবেশ করে হাওরের গভীর রহস্যে। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় হাওরের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের টানাপোড়েন।

থিম ও পরিকল্পনা

লেখক শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ মূলত রহস্য-থ্রিলার লেখক। তার কিশোর উপন্যাস ‘ব্ল্যাক লাইট’ পাঠকমহলে সাড়া জাগিয়েছিল। পেশায় সাংবাদিক হলেও তিনি ‘নিশিদল’ নামে দুঃসাহসিক ভ্রমণ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন। নতুন শর্টফিল্ম *‘নাওবিবি’*তেও রয়েছে সেই রোমাঞ্চের ছোঁয়া।
গল্পের মূল থিম—জলবায়ু পরিবর্তন ও হারিয়ে যাওয়া প্রকৃতি। তবে পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি এতে পাওয়া যাবে রোমাঞ্চ, রহস্য, আবেগ ও সিনেমাটিক আবহ।
নির্মাতা জানিয়েছেন, পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষে ‘নাওবিবি’ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হবে। পাশাপাশি দেশীয় প্ল্যাটফর্মেও মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave Your Comments




ভ্রমণ এর আরও খবর