বেইলি রোডের ফুটপাথে সন্ধ্যা নামে ধূসর আঁধারে। ঢাকার এই পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়ির হাঁকডাক, রিকশার ঝনঝনানি, পথচলার পদশব্দ—সব মিলে এক ক্লান্ত কোলাহল। এই কোলাহলের গাঢ় আড়ালে, ফুটপাতের এক পাশে ঠেস দিয়ে বসে আছেন এক বুড়ো। নাম আবদুল হাকিম। ধুলিধূসরিত কুর্তার হাতায় মুখ গুঁজে, চোখ দুটো জলে থইথই। নিঃশব্দে কাঁদেন তিনি। কান্না শব্দহীন, কিন্তু বুকের ভেতরটা ভেঙে পড়েছে কাদার ঢিবির মতো। সেটা তিনিই জানেন, আর তাঁর আল্লাহ জানেন।
হাকিম সাহেবের পাশ দিয়ে মানুষ হাঁটে। কারো ব্যস্ততা, কারো হাসিখুশি কথা, কারো ফোনে গল্প। কেউ থামে না। এই বুড়ো মানুষটা কেন কাঁদে, তা জানার কৌতূহল কারো নেই। সামনে একটা পুরনো টিনের বাটি। তাতে পড়ে আছে দুটো টাকার কয়েন। হাকিম সাহেব ভিক্ষা চান না। ও টাকা কেউ দয়া করে ফেলে গেছে, তিনি হাতে নেননি। আত্মসম্মান তাঁকে বাঁধে। কারো কাছে হাত পাততে চান না তিনি। চান শুধু একটা জিনিস—মৃত্যু।
“আল্লাহ, আমাকে নিয়ে যাও... এই দুনিয়ায় আমার কিছু বাকি নেই...”
প্রার্থনা ঠোঁটে ক্লান্ত, কিন্তু তীব্র। যেন আল্লাহর সঙ্গে তর্ক করছেন এক অসহায় বাবা—যিনি সব হারিয়ে এখন শুধু মুক্তি খোঁজেন।
হাকিম সাহেবের এই দশা আজকের নয়। একদিন মিরপুরে তাঁর নামডাক ছিল। ফলের ব্যবসায়ী। বড় দোকান, গোডাউন, কর্মচারী। স্ত্রী রোকসানা বেগম—জীবনের আলো। দুই ছেলে রশিদ-আমিন, মেয়ে সোহানা। মানুষ করতে চেয়েছিলেন তাদের। পড়াশোনা, ভালো জীবন—সব দিয়েছেন।
কিন্তু জীবন কঠোর হল। ব্যবসায় ক্ষতি, ধারের জাল, শেষে রোকসানার ক্যানসার। ডাক্তারি বিল দিতে দোকান, জমি, বাড়ি—সব বেচে দিলেন। তবু রোকসানাকে বাঁচাতে পারলেন না। মৃত্যুটা ছিল জীবনের প্রথম বড় আঘাত।
রোকসানার পর ছেলেমেয়েরা সরে গেল। রশিদ বিদেশে, আমিন বিয়ে করে আলাদা হল, সোহানা শ্বশুরবাড়ি। বাবার খোঁজ নেয় না তারা। হাকিম সাহেব দোষ দেননি। ভেবেছেন, নিজেরই হয়তো ভুল ছিল। কিন্তু বুকের গহীনে একটা প্রশ্ন কুরে কুরে খায়—তারা ভুলে গেল কেন?
এখন হাকিম সাহেবের সম্বল? একটা পুরনো কুর্তা, ছেঁড়া জুতো, প্লাস্টিকের ব্যাগে কিছু পুরনো কাগজ আর ছেঁড়া কোরআন শরীফ। বেইলি রোডের ফুটপাতই তাঁর ঠিকানা। দিনে কখনো রিকশাওয়ালাদের পানি বয়ে দেন। বিনিময়ে দুটো রুটি পান। রাতে ক্ষুধার জ্বালায় কান্না পায়।
“আল্লাহ, কারো কাছে হাতই তো পাতিনি... তবু আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছ কেন?”
জবাব আসে না। আকাশের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে কাঁদেন।
একদিন এক তরুণী তাঁর সামনে দাঁড়াল। নাম রিয়া, সাংবাদিক। হাকিম সাহেবের কান্না দেখে থমকে দাঁড়াল।
“বাবা, কাঁদছেন কেন?”
হাকিম সাহেব চুপ। কথা বলতে চান না। রিয়া হাল ছাড়ে না। পাশে বসে, পানির বোতল দেয়।
“আমার গল্প শুনবে কে, মা? আমি তো কেউ নই...”
গলাটা ভারী হাকিম সাহেবের।
“আমি শুনব। শুধু আমি নই, গোটা দেশ শুনবে।”
রিয়ার কথায় হাকিম সাহেবের চোখে এক ঝিলিক, অবিশ্বাসে ঢাকা।
রিয়ার সঙ্গে কথা বলে হাকিম সাহেবের মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এল। কতদিন কেউ তাঁর কথা শোনেনি! রিয়ার চোখে এক আন্তরিকতা—যেন ছোটবেলার সোহানাকে মনে পড়ায়। সোহানাও তো অন্যের দুঃখে কাঁদত, বাবার গল্প শুনতে চাইত। কিন্তু সেই সোহানা এখন কোথায়? বুকের ভেতর ঝড় ওঠে, তবু চুপ।
রিয়া পাশে বসে থাকে। রাত গভীর হয়। বেইলি রোডের কোলাহল কমে। রিয়া নোটবুক বের করে বলে,
“বাবা, আপনার গল্প লিখব... বলুন, কীভাবে এখানে এলেন? পরিবার, জীবন—সব।”
হাকিম সাহেব দ্বিধা করেন। বললে কী হবে? কে শুনবে? কিন্তু রিয়ার কণ্ঠের আকুতি টানে। ধীরে ধীরে বলেন—অতীতের গৌরব, রোকসানার সঙ্গে ভালোবাসার দিন, ছেলেমেয়েদের মানুষ করার স্বপ্ন। তারপর সব হারানোর করুণ গাথা—ব্যবসা, স্ত্রী, সন্তানদের ভালোবাসা। গলা ভারী হয়। রিয়া চোখের জল গিলে শোনে।
“মা, কারো কাছে হাত পাততে চাই না... আল্লাহ আছেন... শুধু এই কষ্ট শেষ হোক...”
হাকিম সাহেব থামলে রিয়া ক্ষণিক চুপ থেকে বলে,
“বাবা, গল্প সবাইকে জানাব... আপনি একা নন।”
রিয়া চলে গেলে হাকিম সাহেব ফুটপাতে শুয়ে আকাশের দিকে তাকান। মনে হয়, আল্লাহ হয়তো তাঁর মুনাজাত শুনেছেন। এই মেয়েটির হাত দিয়েই হয়তো মুক্তি আসবে।
পরের সপ্তাহে রিয়ার ফিচার বেরোল পত্রিকায়। শিরোনাম—“ফুটপাতে এক বাবার নিঃশব্দ কান্না”। গল্পে হাকিম সাহেবের উত্থান-পতনের কাহিনি, আর সমাজের প্রতি কষাঘাত—“বাবাদের কি এভাবেই ভুলে যাই? যিনি সব দিলেন, তাঁকে ফুটপাতে ফেলে রাখি?”
লেখা মানুষের বুক চিরে ঢোকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে গল্প। হাকিম সাহেবের ক্লান্ত মুখ, নিঃশব্দ কান্না—ছবিগুলো দাগ কাটে মনে। সাহায্যের হাত বাড়ে—খাবার, কাপড়। এনজিও আশ্রয়ের প্রস্তাব দেয়। হাকিম সাহেব নিতে রাজি নন।
“আল্লাহর উপর ভরসা... শুধু তাঁর রহমত চাই।”
রিয়া প্রতিদিন আসে। খাবার ভাগ করে, গল্প শোনে। হাকিম সাহেবের মনে প্রশ্ন—ছেলেমেয়েরা কি খবর পেয়েছে? তারা কি ফিরবে?
একদিন রিয়া খবর দিল “বাবা, রশিদ দুবাই থেকে ফিরছে।”
হাকিম সাহেবের চোখে জ্বলে-নিভে আলো। “সে আসবে কেন? ভুলে গেছে তো...”
কয়েকদিন পর রশিদ এল। সঙ্গে আমিন আর সোহানা। তিনজনে বাবার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়াল। রশিদ বলল, “আব্বা, ভুল করেছি... ক্ষমা করুন।”
হাকিম সাহেব চুপ। চোখে জল, কিন্তু কথা নেই। সোহানা পায়ের কাছে বসে ফুঁপিয়ে উঠল। “আব্বা, মাফ করুন... জানতাম না আপনি...”
হাকিম সাহেবের বুকে যুদ্ধ। ক্ষমা করতে চান, কিন্তু আত্মসম্মান বাঁধা দেয়। বললেন,
“এখন এসেছ? যখন দরকার ছিল, তখন কোথায় ছিলে?”
কণ্ঠে বেদনা, তলানিতে একটু ভালোবাসা।
রশিদ বলল, “আপনাকে নিয়ে যাব আমাদের সঙ্গে...”
হাকিম সাহেব মাথা নাড়লেন। “না... যাব না... আল্লাহ যেখানে রেখেছেন, সেখানেই থাকব।”
হাকিম সাহেবের গল্প শুধু পরিবারের নয়। সমাজের মুখোমুখি দর্পণ হয়ে দাঁড়াল। অনেকে গল্প পড়ে বাবা-মায়ের খোঁজ নিতে শুরু করল। সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলন—“আমাদের বাবা-মাকে ভুলব না”।
কিন্তু সবাই সহায়তা করল না। কেউ কেউ হাকিম সাহেবকেই দোষ দিল—“নিশ্চয়ই দোষ ছিল, তাই ছেলেমেয়েরা ত্যাগ করল!” কথাগুলো হাকিম সাহেবের কানে গেল। চুপ শুনলেন। ব্যথাটা বাড়ল।
সন্তানরা সামনে—রশিদ, আমিন, সোহানা। চোখে অনুতাপ, মুখে ক্ষমা। হাকিম সাহেবের হৃদয় পাথর। তাদের দিকে তাকিয়ে চোখে এক ভয়ানক শূন্যতা।
“এখন এসেছ কেন? রাস্তায় ক্ষুধায় কাঁদছিলাম যখন, তোমরা কোথায় ছিলে?”
রাগ নেই কণ্ঠে, শুধু গভীর যন্ত্রণা।
সোহানা কাঁদতে কাঁদতে বলল, “জানতাম না, আব্বা... শ্বশুরবাড়ি খোঁজ নিতে দেয়নি...”
রশিদ মাথা হেঁট করল, “দুবাইয়ে ব্যস্ত ছিলাম... টাকা পাঠাতাম, কিন্তু জানতাম না আপনার অবস্থা...”
আমিন নীরব, চোখে অপরাধবোধ।
হাকিম সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। জানেন, সন্তানেরা ইচ্ছে করে ত্যাগ করেনি। জীবনের ঘূর্ণিপাকে হারিয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা কুরে কুরে খায়—রিয়া না লিখলে কি ফিরত?
বললেন, “যাও... আমার কিছু চাই না... আল্লাহ আমার সঙ্গে আছেন।”
সবাই স্তব্ধ। সোহানা হাত ধরে বলল, “চলুন আমাদের সঙ্গে...”
হাকিম সাহেব মৃদু হেসে বললেন, “মা, আমার ঘর এই ফুটপাত... এখানেই শান্তি... তোমরা নিজেদের নিয়ে থাকো।”
রিয়া দূর থেকে দৃশ্য দেখল। বুঝল, হাকিম সাহেবের জেদ তাঁর আত্মসম্মানের শেষ অস্ত্র। কারো দয়া চান না—সন্তানদেরও না। রিয়ার বুকটা ব্যথায় ভরে গেল। ভাবলেন, হাকিম সাহেবের মতো কতজন নিঃশব্দে কষ্ট পাচ্ছে? ঠিক করলেন, কিছু করবেন।
পরদিন পত্রিকার সম্পাদককে বললেন “আশ্রয় ফাউন্ডেশন”-এর পরিকল্পনা—নিঃস্ব বৃদ্ধদের সম্মানজনক আশ্রয়। সম্পাদক রাজি হলেন।
রিয়া হাকিম সাহেবকে বলল, “বাবা, আশ্রয় গড়ব আপনার জন্য... সম্মানে থাকবেন...”
হাকিম সাহেব ক্লান্ত হাসলেন। “মা, তুমি ভালো... কিন্তু আমার সময় ফুরিয়েছে... বাঁচতে চাই না... তবে তোমার স্বপ্ন অন্যদের কাজে লাগলে, দোয়া করব।”
রিয়া মুগ্ধ হলেন। বুঝলেন, হাকিম সাহেবের জীবন এক বার্তা। কাজ শুরু করলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন। হাকিম সাহেবের গল্পে মানুষ সাড়া দিল। টাকা, জমি—সব এল।
কিন্তু হাকিম সাহেবের শরীর ভেঙে পড়ল। ক্ষুধা, ঠান্ডা, মানসিক যন্ত্রণা শেষ রসটুকু শুষে নিল। এক রাতে ফুটপাতে শুয়ে আকাশের দিকে চোখ রেখে বললেন,
“আল্লাহ, আমি প্রস্তুত... নিয়ে যাও... আর সইতে পারছি না...”
সেই রাতে রিয়া এলেন। দেখলেন, হাকিম সাহেবের চোখ বন্ধ, ঠোঁটে মৃদু হাসি। ডাকলেন,
“বাবা! বাবা!”
কোনো সাড়া নেই। হাত ধরতেই ঠান্ডা। বুঝলেন, চলে গেছেন—নিঃশব্দে, যেমন চেয়েছিলেন।
রিয়া কাঁদলেন। ভাবলেন, বাঁচাতে পারেননি। কিন্তু মৃত্যু দিল এক উদ্দেশ্য—হাকিম সাহেবের নামে “আশ্রয় ফাউন্ডেশন” গড়বেন।
হাকিম সাহেবের মৃত্যুতে সন্তানরা জানাজায় এল। কাঁদল, কিন্তু কান্নায় শূন্যতা। জানত, যথেষ্ট করেনি। রিয়া বললেন,
“বাবাকে হারিয়েছেন, কিন্তু তাঁর গল্প বেঁচে আছে... তাঁর নামে এমন কিছু করব, যেন আর কোনো বাবা ফুটপাতে না কাঁদে।”
হাকিম সাহেবের গল্প সমাজে দোলা দিল। “আশ্রয় ফাউন্ডেশন” গড়ে উঠল। শুধু আশ্রয় নয়—এক সতর্কবার্তা: বাবা-মাকে ভুলো না। তাঁর নামের কেন্দ্রে অনেক বৃদ্ধ হাসি ফুটালেন—যে হাসি হাকিম সাহেব কখনো পাননি।
মৃত্যুর পর বেইলি রোডের ফুটপাত নিঝুম। তাঁর জায়গায় কেউ বসে না। পুরনো টিনের বাটিটা পড়ে আছে—তাতে আর কয়েন জমে না। ফুটপাতটাই যেন শোক পালন করে। কিন্তু তাঁর গল্প, কান্না, আত্মসম্মান—এখন শুধু ফুটপাতে সীমিত নয়। ছড়িয়েছে ঢাকার রাস্তায়, মানুষের বুকে, তারও পরপারে।
রিয়া দৃঢ় হলেন। প্রতিজ্ঞা রেখে মিরপুরে গড়লেন ছোট আশ্রয় কেন্দ্র—দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, ছোট্ট মসজিদ। প্রতিটি ইটে হাকিম সাহেবের গল্পের স্পর্শ।
উদ্বোধনে দরজায় ফলক লাগালেন:
“আশ্রয় ফাউন্ডেশন—আব্দুল হাকিমের স্মৃতিতে।
যেন কোনো বাবা ফুটপাতে কাঁদতে না হয়।”
প্রথম দিনেই এলেন কয়েকজন বৃদ্ধ—পরিত্যক্ত, নিঃস্ব। রিয়া গল্প শুনলেন। বুঝলেন, হাকিম সাহেব একা নন; তাঁর গল্প হাজার হাজার মানুষের প্রতিধ্বনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন। একজন লিখলেন, “তিন বছর বাবাকে ফোন করিনি... হাকিম সাহেব আমাকে বদলে দিলেন।” অসংখ্য মানুষ পরিবারের কাছে ফিরল। হাকিম সাহেবের মৃত্যু জন্ম দিল এক আন্দোলনের।
রশিদ দুবাই থেকে ফিরে ব্যবসার অংশ দান করল “আশ্রয়”-এ: “আব্বার জন্য কিছু করতে পারিনি... এটাই ক্ষমার প্রথম ধাপ।”
আমিন কবরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। স্ত্রীকে বলল, “আমি এমন বাবা হব, ছেলেরা যেন আমাকে ত্যাগ না করে।”
সোহানা শ্বশুরবাড়ির বাঁধন ছিঁড়ে “আশ্রয়”-এ কাজ শুরু করল। রিয়াকে বলল, “আব্বা ক্ষমা করেননি... কিন্তু তাঁর নামে কাজ করে নিজেকে ক্ষমা করতে চাই।"
মৃত্যুর এক বছর পর, শীতের সকালে রিয়া কবরে এলেন। মিরপুরের সাধারণ কবরস্থান। পাশে সোহানা, রশিদ, আমিন। কবরের পাশের ফলকে লেখা:
“আব্দুল হাকিম—
একজন বাবা, যিনি নিঃশব্দে কেঁদেছিলেন,
কিন্তু তাঁর গল্প আমাদের জাগিয়েছে।”
রিয়া বললেন, “বাবা, আল্লাহ আপনাকে নিয়ে গেছেন... কিন্তু গল্প বেঁচে আছে। শিখিয়েছেন—ভালোবাসা আর সম্মান কখনো মরে না।”
বিকেলে “আশ্রয়”-এর উঠানে অনুষ্ঠান হল। বৃদ্ধেরা গল্প বললেন। মুখে হাসি, চোখে আশা। রিয়া মঞ্চে বললেন, “হাকিম সাহেবের বার্তা—বাবা-মাকে ভুলো না... সম্মান দাও, পাশে থাকো। এই আশ্রয় তাঁরই নামে, তাঁর স্মৃতিতে।”
হাকিম সাহেবের গল্প শেষ হয়নি। তা হয়ে উঠেছে আন্দোলন। বেইলি রোডে তাঁর কান্না শোনা যায় না, কিন্তু গল্প প্রতিটি হৃদয়ে ধ্বনিত হয়। তিনি চলে গেছেন, কিন্তু আত্মসম্মান, ঈমান, ভালোবাসা বেঁচে আছে—আশ্রয় ফাউন্ডেশনের প্রতিটি ইটে, প্রতিটি হাসিতে।
হাকিম সাহেবের জীবন ট্র্যাজেডি, কিন্তু মৃত্যু জন্ম দিল নতুন শুরুর। গল্প সমাজকে জাগাল। রিয়ার হাতে উত্তরাধিকার বেঁচে রইল। সন্তানরা ক্ষমা না পেলেও, তাঁর নামে কাজ করে খুঁজে নিল শান্তি।
Leave Your Comments