প্রকাশিত :  ০৬:২২
২৯ ডিসেম্বর ২০২১

শামির ৫ উইকেট, সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে তৃতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে ভারত

শামির ৫ উইকেট, সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে তৃতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে ভারত



সেঞ্চুরিয়ান টেস্টের তৃতীয় দিন ঘটনাবহুল হয়ে রইল। রোমাঞ্চে ভরা। ক্রিকেট কেন মহান অনিশ্চয়তার খেলা সেটা বোঝার জন্য ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা আজকে, অর্থাৎ তৃতীয় দিন সকালে খেলাটা দেখলেই উত্তর পাওয়া যাবে। তাসের ঘরের মতো ভারতের ইনিংস গুটিয়ে যাবে কে ভাবতে পেরেছিল? সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে মুখে পড়ল ভারত।

প্রথম দিনের শেষে ভারতের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ২৭২। লোকেশ রাহুল ১২২ ও অজিঙ্ক রাহানে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় দিন বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার পর আজ প্রথম ঘণ্টাতেই ৬ উইকেট হারায় বিরাট কোহলির দল। এরপর ৩২৭ রানে শেষ হয় ভারতের প্রথম ইনিংস। ৬ উইকেট নিলেন লুঙ্গি এনগিডি। আজ দিনের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে আউট হন লোকেশ রাহুল। কাগিসো রাবাডার বলে তিনি কট বিহাইন্ড হন ১২৩ রানে।

দিনের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে ফেরেন অজিঙ্ক রাহানে। ৯টি চারের সাহায্যে তিনি ১০২ বলে ৪৮ রান করে লুঙ্গি এনগিডির বলে কট বিহাইন্ড হন। ২৯১ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট। সেখান থেকে ৩০৮ রানে নবম উইকেট হারায় ভারত। মাত্র ১২ রানের ব্যবধানে পড়ে চার উইকেট। সুনীল গাভাসকরের মতে, রাহুল বা রাহানে আর কয়েকটা ওভার কাটাতে পারলেই খেলার ফল অন্যরকম হতে পারতো।

কেন না, ছন্দ ফিরে পাওয়া সহজ নয়, উইকেটে থিতু হওয়াটা জরুরি। অন্যদিকে, বোলারদের হাল্কা যদি চোট বা ক্লান্তি প্রথম দিনের শেষে থেকেও থাকে, তা সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় তাঁরা পেয়েছেন গতকাল খেলা না হওয়ায়। তবে অলআউট হওয়ার পর বল করতে নেমে ভারতীয় বোলাররা কেমনভাবে পাল্টা জবাব দেন সেটাই দেখার ছিল। বুমরাহ, সিরাজ দুর্দান্ত শুরু করলেন।

অধিনায়ক এলগার এক রান করে বুমরাহর বলে ফিরে গেলেন উইকেট রক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তারপর মহম্মদ শামি ফিরিয়ে দিলেন পিটারসেন (১৫) এবংমার্করামকে (১৩)। দুটোই স্বপ্নের ডেলিভারি। দুটোই বোল্ড। ব্যাটসম্যানরা বলের লেট মুভমেন্ট ধরতে পারেননি। ভ্যান ডের দুসেনকে ফিরিয়ে দিলেন সিরাজ। স্লিপে অনবদ্য ক্যাচ দিলেন অজিঙ্কা রাহানে।

তবে বাভুমা এবং কুইন্টন ডি কক কিছুটা লড়াই করলেন। উইকেটে পড়ে থাকলেন। বলের মেরিট বুঝে খেলার চেষ্টা করলেন। তবে ভারতের পক্ষে চিন্তার খবর গোড়ালিতে চোট পেলেন জসপ্রীত বুমরাহ। বল করার সময় ফলো থ্রু তে তার ডান পা মচকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। ফিজিওর সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায় বুমরাহকে। গ্যালারিতে উঠে নেমে দেখার চেষ্টা করছিলেন কতটা ব্যথা লাগছে।

তবে সিরাজ চা বিরতির আগে পর্যন্ত একটি উইকেট পেলেও দুর্দান্ত কিছু বল করলেন। পরের দিকে বিরাট কোহলি আক্রমণে আনলেন অশ্বিনকে। লক্ষ্য ছিল বাঁহাতি কুইন্টন ডি কককে তুলে নেওয়া। তবে এই দুজন প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়েছে ৬০ রানের ওপর পার্টনারশিপ গড়লেন। দলের রান একশো পার করলেন। কিন্তু শার্দুল ঠাকুরের বলে কভারে খেলতে গিয়ে প্লেড অন হলেন ডি কক (৩৪)। গুরুত্বপূর্ণ উইকেট পেয়ে গেল ভারত।

চা বিরতির পর মুল্ডরকে (১২) ফিরিয়ে দিলেন শামি। দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ স্কোরার বাভূমাকেও (৫২) ফিরিয়ে দিলেন শামি। এরপর মার্কো জেন্সেন (১৯) এবং রাবাডা (২৫) কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু শার্দুল ঠাকুর এবং শামি ফিরিয়ে দিলেন দু'জনকে। শামি এই নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০০ তম উইকেট তুলে নিলেন।

কেশব মহারাজ (১২) আউট হলেন বুমরাহর বলে। বুমরাহর চোট গুরুতর নয়, এই ব্যাপারটা চিন্তা কমাবে ভারতের। দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়ে গেল ১৯৭ রানে। প্রথম ইনিংসে ভারত ১৩০ রানে এগিয়েছিল। দিনের কিছুটা সময় বাকি ছিল। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামল ভারত। ষষ্ঠ ওভারে মার্কো জেনসেনের বলে খোঁচা দিয়ে ফিরে গেলেন মায়ানক আগারওয়াল (৪)।

নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামলেন শার্দুল ঠাকুর। তিনি অপরাজিত আছেন ৪ রানে। কে এল রাহুল অপরাজিত ৫ রানে। পঞ্চম দিনে আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তাই আগামীকাল অর্থাৎ চতুর্থ দিন দ্রুত রান তুলতে হবে ভারতকে। ৩০০ তুলতে পারলেও প্রথম টেস্টে জয়ের সুযোগ থাকবে ভারতের সামনে।


Leave Your Comments




খেলাধুলা এর আরও খবর