প্রকাশিত : ১৮:৫৭
২৮ আগষ্ট ২০২৪
রেজুয়ান আহম্মেদ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারের সার্কিট ব্রেকার নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনছে। ২৪ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন সীমা ৩ শতাংশ প্রত্যাহার করার পর, ২০২১ সালের ১৭ জুনের নির্দেশনা আবার কার্যকর হচ্ছে, যা শেয়ারদরের ওঠানামার ক্ষেত্রে নতুন সীমা নির্ধারণ করবে। এটি বাজারের জন্য কী পরিণতি বয়ে আনতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা যাক।
সার্কিট ব্রেকার এবং এর বর্তমান পরিবর্তন:
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে, কোম্পানির শেয়ারের মূল্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সীমা পরিবর্তিত হবে:
- মূল্য ২০০ টাকার মধ্যে: সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে।
- মূল্য ২০০ টাকার উপরে থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত: সর্বোচ্চ ৮.৭৫ শতাংশ।
- মূল্য ৫০০ টাকার উপরে থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত: সর্বোচ্চ ৭.৫০ শতাংশ।
- মূল্য ১০০০ টাকার উপরে থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত: সর্বোচ্চ ৬.২৫ শতাংশ।
- মূল্য ২০০০ টাকার উপরে থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত: সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ।
- মূল্য ৫০০০ টাকার উপরে: সর্বোচ্চ ৩.৭৫ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীদের লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণ:
১. বাজারে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি:
সার্কিট ব্রেকারের এই পরিবর্তন বাজারে অধিক স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। গত এপ্রিলের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বাজারের অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বর্তমানে উচ্চতর সীমা পুনর্বহাল করার মাধ্যমে বাজারে অবিশ্বাস্য রকমের উঠানামা কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে পারে।
২. লাভের সুযোগ:
বর্তমান নির্দেশনা অনুযায়ী, শেয়ারদরের ওঠানামার সুযোগ বেড়ে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজারের ওঠানামার সুবিধা নিয়ে লাভের সুযোগ পেতে পারেন। যেসব শেয়ার গত কয়েক মাসে সীমাবদ্ধতার কারণে সীমিত ওঠানামার মধ্যে ছিল, সেগুলির দাম বেড়ে যেতে পারে।
৩. অস্থিরতা বৃদ্ধি:
যদিও উচ্চতর সীমা কিছু ক্ষেত্রে বাজারের ক্ষতি কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে এটি কিছু ক্ষেত্রে অস্থিরতা বাড়াতে পারে। বেশি ওঠানামার কারণে বাজারে অতিরিক্ত উন্মাদনা দেখা দিতে পারে, যা স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, কম প্রায়শই লেনদেন করা শেয়ারগুলোতে এই ধরনের অস্থিরতা বেশি দেখা যেতে পারে।
৪. বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া:
বিনিয়োগকারীরা সাধারণত সাময়িকভাবে এই পরিবর্তনগুলোকে সামাল দিতে সমস্যা হতে পারে। প্রাথমিকভাবে কিছু বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন, যা বাজারের আরও অস্থিরতা বাড়াতে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদে যদি বাজার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনে এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের কৌশল সামঞ্জস্য করতে পারে, তাহলে এটি তাদের জন্য উপকারী হতে পারে।
সার্কিট ব্রেকার পরিবর্তনটি বাজারে বৈচিত্র্য এবং সুযোগ নিয়ে আসতে পারে, তবে এটি অস্থিরতা বাড়ানোর সম্ভাবনাও বহন করে। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি লাভজনক হতে পারে যদি বাজারের পুনর্গঠন সঠিকভাবে ঘটে এবং নতুন নিয়মগুলো বাস্তবায়িত হয়। স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য, এই পরিবর্তনগুলি উপকারী হলেও, সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
বাজারের প্রতিক্রিয়া এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে, ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।