প্রকাশিত : ০৮:১৮
০৭ জুলাই ২০২৪
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ান। ৬৯ বছর বয়সী এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সাঈদ জালিলির বিপক্ষে রানঅফ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ভোটের মধ্যে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ ভোট পেয়ে পেজেশকিয়ান নির্বাচিত হন, যা মোট ভোটের ৫৪ শতাংশ।
পেজেশকিয়ান তার নির্বাচনী প্রচারণায় ইরানকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্নতা মুক্ত করে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পরাশক্তির সাথে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকারও করেন, যা ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপ সীমিত করতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছিল।
২০২২ সালে হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মাসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পেজেশকিয়ান তার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিধানের বিরোধিতা করেছেন এবং ইরানে ইন্টারনেটের ওপর কড়াকড়ি শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পেজেশকিয়ান তার সরকারে আরও নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ান দেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। তবে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ওপর তার কোনও কর্তৃত্ব থাকবে না, কারণ এসব বাহিনী সরাসরি সর্বোচ্চ নেতার কাছে জবাবদিহি করে।
নতুন প্রেসিডেন্টের বিজয় নিয়ে ইরানিদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ আশাবাদী হলেও অনেকেই সন্দিহান। তেহরানের এক বাসিন্দা বলেন, জনগণের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের একজন শিক্ষিত প্রেসিডেন্টের প্রয়োজন। তবে অন্য একজন বাসিন্দা বলেছেন, পেজেশকিয়ানের জয় দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পেজেশকিয়ান ইরানের সমস্যাগুলোর তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে পারবেন না। তবে বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার আগ্রহ রয়েছে, যা বর্তমান সরকারের থেকে ভিন্ন।